আজ বুধবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঢাকা-চট্রগ্রাম-ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক লুটে খাচ্ছে!

“জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে,
কোন শ্রমিক সংগঠন ও দলের নাম বলে
চাঁদা দাবি করলে ছাড় দেয়া হবে না : পুলিশ

“মহাসড়কে পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগে
চাঁদাবাজ চক্রের ১৩ জনকে আটক করেছে র‌্যাব

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

গাড়ী থামাই আর টাকা দেই। সকালে গাড়ী চালানো শুরু করলে রাত পর্যন্ত যা কাজ হয় তার অর্ধেকের বেশী দিয়া দিতে হয় রোডের চানঁদা। চানঁদা না দিলে গাড়ী তো চলবো না। চানঁদা কেউ সামনে নেয় কেউ গুরায়া নেয় কিন্তু চানঁদা সবাই নেয়!

গতকাল ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় পরিবহন চালকের কাছ থেকে এসব শুনা যায়, তিনি আরো বলেন, সড়কে যদি ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা ও পুলিশ প্রশাসন স্ট্যান ও গাড়ী গুলোকে নিয়ন্ত্রন না করতো তাহলে যাত্রীদের এতো টাকা ভাড়া দিতে হতো না। সড়কে খরচ বেশী হওয়ায় এই টাকা ভাড়া বাবদ যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। এছাড়া ঈদে মহাসড়কে চলাচলের সময় এই প্রভাব বেশি থাকে। মহাসড়কে লুটে খাচ্ছে চালকদের দেখিয়ে।

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় দিয়ে দেশের প্রায় ২২’টি জেলার যাত্রী পরিবহন চলা-চল করে আসছে। এর মধ্যে সবকটি জেলার বাস কাউন্টার রয়েছে শিমরাইল মোড়ে। যাতায়াতকারী বিভিন্ন পরিবহন গুলো থেকে সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন অবস্থায় চাঁদা আদায় হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে ফুটপাট বসিয়ে এক সময় চাঁদাবাজি করতো সাতখুন মামলার প্রধান আসামি  নূর হোসেন। সাত খুনের ঘটনার পর নূর হোসেন কারাগারে থাকার কারণে অনেক দিন বন্ধ ছিল শিমরাইল মোড়ের চাঁদাবাজি। এরপর শিমরাইল মোড়ে ফুটপাতের ওপর নজর পড়ে নাসিকের কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল ও কাউন্সিলর ওমর ফারুকের।

তারা এখন শিমরাইল রেন্টকার স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে হাজী আহসান উল্ল্যাহ মার্কেট ইউটার্ন পর্যন্ত ৩ শতাধিক দোকান বসিয়ে দৈনিক লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে আসছে বলে দৈনিক ইত্তেফাক সূত্রে যানা যায়।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ৩৯ উপজেলার মানুষ চলাচল করে থাকে। এ সড়কের নারায়ণগঞ্জের ভূলতা ও গোলাকান্দাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে পরিবহন থেকে একদল চাঁদা উত্তোলন করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এছাড়া  রাতে ভূলতা ও গোলাকান্দাইল মহাসড়কের চিত্র পাল্টে যায়। রাত হলেই ভূলতা ও গোলাকান্দাইল স্ট্যান্ড চলে যায় ছিনতাইকারীরদখলে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিভিন্ন পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগে চাঁদাবাজ চক্রের ১৩ জনকে আটক করেছে র‌্যাব-১১।

৩০মে শুক্রবার সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল ও সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়কে চাঁদাবাজির সময় তাদের আটক করা হয়। র‌্যাব এসময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা জব্দ করে। বিকেলে সাইনবোর্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানায়।

এসময় র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিবহন চাঁদাবাজ চক্রের নেপথ্যে যারা নিয়ন্ত্রন করছে তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই চক্রের নেপথ্যের গডফাদাররা যতোই প্রভাবশালী হোক বা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকুক না কেন তাদের কাউকেই র‌্যাব ছাড় দেবে না। শীঘ্রই র‌্যাব এই সব গডফাদতারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহসড়ক দিয়ে পরিবারের সাথে ঈদ করতে যাওয়া মানুষগুলো যাতে নির্ভিগ্নে যেতে পারে সে লক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ।

গত ২৮ মে দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহসড়ক পরিদর্শনে কালে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, সড়ক-মহাসড়কে ছিনতাই চাঁদাবাজ রোধে ইতিমধ্যে আমাদের আইজিপি স্যার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। কোন শ্রমিক সংগঠন বা কোন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা দাবী করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কোন পুলিশ সদস্যও যদি কারো কাছে চাঁদা দাবি করে তাহলে সাথে সাথে আমাদের জানাবেন। আমরা তাৎক্ষনিকভাবে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।